আসসালামু আলাইকুম ✡ সাইবার ম্যাজিকের ডে শিফট এবং নাইট শিফটে দুই মাস মেয়াদী ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্সটিতে ভর্তি চলছে ✡ ভর্তি ফি ৩৫০০ টাকা ✡ বিস্তারিত জানতে কল করুন 01638009153 একটি ভ্রমণের অভিজ্ঞতা জানিয়ে বন্ধুকে চিঠি

 



১৯শে ডিসেম্বর, ২০২১

দিনাজপুর



প্রিয় সৈকত,

অনেকদিন তোমার চিঠিপত্র পাইনা। তুমি কেমন আছো? আশা করি ভালো আছো। শেষবার যখন আমাদের দেখা হয়েছিল, তুমি বলেছিলে কখনো পাহাড় বেড়াতে গেলে তোমাকে যেন আমি ভ্রমণের সেই অভিজ্ঞতা অবশ্যই জানাই। অতিসম্প্রতি পরিবারের সাথে এমনই একটি ভ্রমণে যাওয়ার সুযোগ আমার ঘটেছিল। এইবার গিয়েছিলাম উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং শহরে। এটাই আমার প্রথম পাহাড় ভ্রমণ।তোমাকে বলে বোঝাতে পারবো না সৈকত, কি অপূর্ব সুন্দর এই দার্জিলিং শহর। পাহাড়ের ওপর ধাপ কেটে কেটে তৈরি হয়েছে ছোট ছোট বাড়ি। ওঠার সময় পাহাড়ের খাদের গা ঘেঁষে কত ছোট ছোট কাঠের তৈরি দোকান, তুমি দেখলে অবাক হয়ে যাবে। আর আমার কাছে সব থেকে বেশি যেটা আকর্ষণীয় লাগলো, তা হল এখানকার পাহাড়ি লোকেদের চা বাগান আর স্থানীয় জীবনযাত্রা। কি অদ্ভুত পরিশ্রমী ও কর্মঠ এখানকার মানুষ, বিশেষ করে পাহাড়ি মহিলারা।

ছোট ছোট বাচ্চা কোলে নিয়ে চা বাগানে এরা কি ভীষণ পরিশ্রম করে, আর কাজের শেষে পিঠে চায়ের পাতা বোঝাই করে পাহাড়ি পথ বেয়ে উঠে যায়। কি অদ্ভুত কষ্টকর কিন্তু সরল এখানকার মানুষের রোজকার জীবনচর্যা। আর ভ্রমণের তৃতীয় দিনে আমরা গিয়েছিলাম টাইগার হিলে সূর্যোদয় দেখতে। কি যে অপরূপ সুন্দর সেই সূর্যোদয়, আর তার বিপরীতে বরফাবৃত সোনালী কাঞ্চনজঙ্ঘার দৃশ্য, তা না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না।হাড় কাঁপানো ঠান্ডার মধ্যে বেড়ানোর সময় প্রতিমুহূর্তে তোমার কথা মনে আসছিল। আমি ঠিক করেছি তোমার আপত্তি না থাকলে একবার সময় করে আমরা দুই বন্ধু এই শহরে বেড়াতে আসবো। এই সম্পর্কে তোমার কি অভিমত, তা জানিও। আমার ভালোবাসা নিও। কাকু কাকিমাকে আমার প্রণাম জানিও।

                                                         শুভেচ্ছান্তে,  ইতি,
তোমার প্রিয় বন্ধু চন্দ্রিপ্রাপকের ঠিকানা:                    

সৈকত সামন্ত,
প্রযত্নে: অধীর সামন্ত
বাঁশবেড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েত
পূর্ব মেদিনীপুর

চিঠি ২

বন্ধু তমোঘ্ন,

গতকাল তোর চিঠি পেলাম। প্রায় মাসখানেক তোর সাথে যোগাযোগ ছিল না। তুই তোর চিঠিতে জানতে চেয়েছিস, কেন এই দীর্ঘদিন আমি কোন চিঠিপত্র পাঠাইনি বা তোর আগের চিঠির উত্তর দেইনি! এ প্রসঙ্গে বলি, আমি প্রায় মাসখানেক আগে আমাদের গ্রামের বাড়ি সজনেখালিতে ছুটি কাটানোর উদ্দেশ্যে গিয়েছিলাম। সেখান থেকে তোকে চিঠি লেখা সম্ভব হয়ে ওঠেনি।জানিস, আমরা সবাই মিলে গ্রামের বাড়ি থেকে সুন্দরবনের জঙ্গলে বেড়াতে গিয়েছিলাম। আমি ইতিপূর্বে কখনো সুন্দরবন দেখিনি। কি অপূর্ব মোহময়ী জঙ্গল এই সুন্দরবন, তা তুই না দেখলে বিশ্বাস করতে পারবি না। তিন দিনের এই সুন্দরবন সফরে সবকটি দিনই আমরা কাটিয়েছিলাম লঞ্চে।নদীর বুকে ভেসে চলা লঞ্চের ওপর তিনটি দিন জীবনযাপনে অদ্ভুত সুন্দর লেগেছিল আমার। সুন্দরবনে জলে কুমির আর ডাঙায় বাঘ দুইই স্বচক্ষে দেখার সৌভাগ্য হয়েছে আমার। একদিন দুপুরের দিকে খাওয়া-দাওয়া করে লঞ্চের দিকে এসে বসেছি, দেখি দু-দুটো কুমির নদীর পাড়ে কাদার উপর শুয়ে রোদ পোহাচ্ছে।

কুমির দেখে আমাদের লঞ্চের লোকজনের ছবি তোলা আর আনন্দ উত্তেজনার চিৎকারে কুমির দুটো ডাঙ্গা ছেড়ে জলে নেমে গেল। এর পরদিন বিকেলে একটা বাঘকে নদীতে জল খেতে দেখলাম। এই আমার প্রথম রয়েল বেঙ্গল টাইগার দেখা। তাছাড়া অদ্ভুত সুন্দর এখানকার জঙ্গলগুলো। প্রকৃতি কি সুন্দর গাছপালা পশুপাখি দিয়ে সাজিয়ে রেখেছে এই সুন্দরবনকে।তোর সাথে দেখা হয় না অনেকদিন। ছুটি শেষ হওয়ার পর দেখা হলে এই নিয়ে অনেক গল্প করব। আর হ্যাঁ, আমরা সবাই ভালো আছি। তুই আর বাড়ির সবাই কেমন আছে জানাস। কাকু-কাকিমাকে আমার প্রণাম দিস। তুই আর বুলটি ভালোবাসা নিস। 

ইতি,
তোর প্রিয় বন্ধু সোমনাথ

প্রাপকের ঠিকানা:
তমোঘ্ন চৌধুরি,
প্রযত্নে: অমিত চৌধুরী
১৩/৪ যদুনাথ বাটি
হালিশহর


Previous Post Next Post